বাংলাদেশে ছোট-বড় সবাই এখন গ্যাস্ট্রিকে ভুগে। সাধারনত তৈলাক্ত এবং ভাজা-পোড়া বেশি খাবার এর জন্য এই সমস্যাটা দিন দিন বৃদ্বি পাচ্ছে সবার।
শুরুতে যদি আপনি সচেতন না হন তাহলে এই Gastric সমস্যা থেকে আপনার আলসার হয়ে যেতে পারে। এবং আলসার থেকে সহজেই ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। তো এই অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিক থেকে মুক্তির উপায়? আমরা সকলেই যে ভুল গুলো করি সেটা হল গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় খুজতে গিয়ে আমরা ওষুধের দিকে জুকে পড়ি। আর এই ওষুধগুলো সাময়িক প্রশান্তি দিলেও চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করে না এবং এগুলো নিয়মিত খেতে থাকলে আমাদের শরীল এর জন্য ক্ষতিকর।
তো কি খেলে গ্যাস্ট্রিক ভাল হয় ? এমন কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে আপনার চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর হবে ।
আদার উপকারিতা
গ্যাস্ট্রিক আদা উপকারিতা অনেক। যাদের প্রচুর পরিমানে গ্যাস্ট্রিক আছে তারা আদা খেলে কার্যকারী উপকার পাবেন , কারণ আদাতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান । পেটে যদি ব্যাপা দেয় এবং পেটে যদি গ্যাস জমে তাহলে আপনি আদা কুচি-কুচি করে কেটে সামান্য লবন দিয়ে খান দেখবেন কিছুখনের মধ্যে ভালো লাগা কাজ করবে পেটের ভিতর এবং আপনার পেটে গ্যাস কমতে থাকবে।
পেটে অনেক সময় ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া আক্রান্ত করে থাকে সেগুলো দূর করতে আদা খুবই কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া আদা কুচিকুচি করে লবন দিয়ে খেলে সর্দি, কাশি সহ আরও অনেক রোগ ভালো হয়। আদা খেলে দেহের বদ-হজম দূর হয়। পেটে গ্যাস্ট্রিক আক্রান্ত হলে বমি বমি ভাব বেড়ে যায়, যদি আপনি আদা খান তাহলে বমিও দূর করে আদায়।
দই এর উপকারিতা
দই সাধারনত আমরা খেয়ে থাকি স্বাদের জন্য। তবে দই রয়েছে ল্যাকটোব্যাকিলাস, অ্যাসিডোফিলাস ও বিফিডাসের মতো নানা ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া ফলে পেটের বদ হজম সহজেই দূর হবে। আর আমাদের পেটে বেশিরভাগ গ্যাস জমার মূল কারণ হল বদ-হজম। দই খেলে সহজেই খাবার হজম হয়ে যায়, আর তাই চেষ্টা ভারী খাবার খেলে দই খেতে।
দইতে থাকে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি-২, পটাসিয়াম , ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি-১২ এবং দই খেলে শরীল ঠান্ডা থাকে আর হজম শক্তি তো আছেই। দইয়ের ল্যাকটিক এসিড শরীলের ত্বককে মসৃণ এবং পরিষ্কার করে।
রসু্নের উপকারিতা
রসুন আমরা সাধারনত তরকারীতে দিয়ে রান্না করে খাই। কিন্তু রসুন কিন্তু অ্যাসিডিটি দূর করার খুবই কার্যকারী একটা উপাদান।
আপনি যদি কাচা রসুন খেতে পারেন তাহলে পেটের অ্যাসিড ক্ষরণের মাত্রা স্বাভাবিক হবে। এর ফলে গ্যাস দ্বারা উংপাদিত অসুখ গুলো ধীরে ধীরে কমে আসবে। রসুনের উপকারিতা আরো অনেক রয়েছে এই ধরুন রক্ত সঞ্চালন করতে এবং কম কলেস্টেরল উংপাদন করতে সাহায্য করে। খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিক কমে যাওয়ার পাশাপাশি হার্টও ভালো থাকবে কারণ রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখবে।
শসা এর উপকারিতা
শসা খেলে পেট ঠান্ডা হয়। শসায় আছে ফ্লেভানয়েড এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটের গ্যাস কমায়। শসায় রয়েছে মিনারেল এবং ভিটামিন। এর ৯৫ পার্সেন্টেই হল পানি। গ্যাস্ট্রিক কমানোর পাশাপাশি শসা আরোও কিছু ভালো দিক রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল এটি ওজন কমাতে সাহাজ্য করে।
শসা বুক জ্বালাপোড়া, এসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রিক কমাতে কার্যকারী ভূমিকা পালন করে।
পেপের উপকারিতা
পেপে গ্যাস্ট্রিক এর জন্য উপকারিতা অনেক। পেপেতে রয়েছে পেপেইন নামক এনজাইম এর ফলে খাবার হজম হতে সাহায্য করে।
কাচা পেপে প্রচুর পরিমানে এনজাইম থাকে , তাই নিয়মিত পেপে খেলে গ্যাস এর উপদ্রব দূর হবে। এছাড়াও পেপে লিভার এর চিকিংসা এর জন্য খুব ভালো কাজ করে।
আনারসের উপকারিতা
আনারসে রয়েছে ব্রোমেলিন এনজাইম। যা হল ন্যাচারাল এনজাইম ফলে পেটের হজম শক্তি বৃদ্বি করে। আনারস ত্বকের জন্য খুব উপকার। ব্রোমেলিন এনজাইম পেটের জন্য খুব ভালো একটা পাচক রস। তাই পেট পরিস্কার করতে আনারস এর কদর অনেক।
আনারসে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং সি, পটাশিয়াম ও ফসফরাস যার ফলে দেহের পুষ্টি ঘাটতি দূর করে। তাই দেহের পুষ্টির জন্যও আনারস খুব ভালো একটা উপাদান।
হলুদের উপকারিতা
হলুদ খেলে চর্বি জাতীয় খাবার হজম করতে সাহায্য করে। হলুদ বদহজম দূর করে। হলুদ নিয়মিত খেলে আলসারেটিভ কোলাইটিস, ক্রোনস ডিজিজ ইত্যাদি পেটের রোগ দূর করতে পারে। কারণ হলুদে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট।
কাচা হলুদ মুখের রঙ উচ্চল করতেও ব্যবহার করা হয়। নিয়মিত হলুদ খেলে শরীলের রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়।
পানি
শুনতে অদ্ভুদ লাগলেও পানি দ্বারাও কিন্তু গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করা যায়। সকালে খালি পেটে প্রতিদিন যদি দুই গ্লাস এর মত পানি পান করেন দেখবেন সারাদিনে গ্যাস্ট্রিক এর মাত্রা কম হবে। পানি শরীলে হজম শক্তি এর মাত্রা বৃদ্বি করে। তাই পানি পেটের জন্য খুব উপকারী। খালি পেটে পানি পান করলে আপনার পেটে পরিষ্কার থাকবে। এবং নিজের কাছে ভালো লাগা কাজ করবে।
এই খাবার গুলোর মাধ্যমে আপনার গ্যাস্ট্রিক কমে আসবে। খেতে হবে না ফার্মিসি থেকে গ্যাস্ট্রিক এর মেডিসিন। তবে সাবধান যে সকল খাবারে আপনার গ্যাস্ট্রিক বৃদ্বি পায় সেগুলো এড়িয়ে চলুন। মানুষ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে গ্যাস্ট্রিক বৃদ্বি পেতে পারে।
যেমন কারো হয়তো খাবার ডালে গ্যাস্ট্রিক হয়, কারো হয় না। তাই আপনার খাবার গুলো খেয়ে বুঝতে কোন খাবারে গ্যাস্ট্রিক বৃদ্বি পায় সেগুলো খাবেন না।
এছাড়া বাইরে থেকে খাওয়া বাদ দিবেন। যতটা সম্ভব ঘরোয়া খাবার বেশি খাবেন। প্রচুর তেলে ভাজা খাবার খাবেন না। এগুলো পেট এর উপর খুব অত্যাচার করে। সব সময় জ্বাল খাবার এড়িয়ে চলবেন। আপনি যদি ধূমপান করেন তাহলে ছেড়ে দিবেন এটা আপনার পেটে প্রদাহ বৃদ্বি করে।