যত ভালো মোবাইল আপনি কিনেন না কেনো সময়ের সাথে সাথে মোবাইল এর ব্যাটার এর আয়ু কিন্তু কমে আসে। আপনার মোবাইল এর বয়স যদি ১.৫ থেক ২ বছর হয়ে যায় তাহলে কিন্তু দেখবেন আপনার মোবাইল এর ব্যাটারি আর আগের মত পারফরমেন্স দেয় না।
আমাদের মোবাইলে যে ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় তা আসলে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি থাকে এবং এই সব ব্যাটারি কিন্তু সময়ের সাথে সাথে নষ্ট হয়ে যায়।
আইফোন এর আপল কম্পানি কিন্তু স্বীকার করে নিয়েছে যে একটা সময়ের পর মোবাইল এর ব্যাটারির কার্যক্ষমতা কমে যায়।
আজকের এই টিউটোরিয়ালে আমরা আলোচনা করবো কিভাবে ব্যাটারিকে একটু ভালোভাবে ব্যবহার করে এর কার্যক্ষমতা ঠিক রাখা যায় এবং বেশিদিন ব্যাটারি থেকে পারফরমেন্স পাওয়া যায়।
মোবাইলে ব্যাটারি সেভার মুড অন করুন
আমাদের মোবাইলে প্রতিনিয়ত ব্যাকগ্রাউন্ডে আপস রান হয়। অনেক আপস আছে যেগুলো আসলে প্রয়োজন নেই তবুও রান হতে থাকে। এই ধরনের সমস্যা কিন্তু অনেকটা লাগব হয় ব্যাটারি সেভার অন রাখলে। অপ্রয়োজনীয় প্রসেসিং ব্যাটারি সেভার মোড অফ করে রাখে।
অনেক ব্যবহারকারী আছেন ব্যাটারি সেভার মোড অন করেন না। তবে ভালো কথা এই যে বাজারে এখন অনেক মোবাইল আছে যেগুলো ব্যাটারি সেভার মুড অন করে দেয় অটোমেটিক ব্যাটারির চার্জ ২০% এর নিচে গেলেই। তবে আপনি মেন্যুয়ালি আরও আগে থেকেও করতে পারেন। এতে আপনার মোবাইলের ব্যাটারি ভালো থাকার পরিমান বেড়ে যাবে।
মোবাইল চার্জ দেওয়ার সময় সচেতন হন
আপনি চেষ্টা করবেন মোবাইল রাত্রে চার্জ দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার বদ-অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে। মোবাইল চার্জ দিয়ে ঘুমিয়ে যাওয়ার ফলে আপনার মোবাইলের ব্যাটারি খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
বর্তমানে ফার্স্ট চার্জিং এর সেট বাজারে প্রচুর এই সেটগুলো খুব দ্রূত চার্জ এডাপ্ট করে। আপনি যদি অভার চার্জ প্রদান করেন তাহলে এটি আপনার মোবাইল এর জন্য খারাপ দিক।
লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি যুক্ত মোবাইল গুলো সব সময় চেষ্টা করবে ২০-৮০% এর মধ্যে চার্জ রাখার। সব সময় ১০০% চার্জ লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি এর জন্য খুব একটা ভালো না। ৯০-৯৫% এর বেশি চার্জ দিবেন না। তবে আপনি চাইলে মাসে একবার ফুল চার্জ করতে পারেন। এতে আপনি বেনেফিট পাবেন।
মোবাইলে অপ্রয়োজনে ব্লুটুথ ও ওয়াইফাই বন্ধ রাখুন
যদি আপনার ওয়াফাই বা ব্লুটুথ প্রয়োজন না পড়ে তাহলে শুধু শুধু এইগুলো অন রাখা ঠিক না। এই সব ফিচার অন থাকলে মোবাইলের উপর চাপ পড়ে। এইগুলো যদি অপ্রয়োজনে ওপেন রাখেন তাহলে এটি সব সময় নতুন ডিফাইস সার্চ করতে থাকে। এর ফলে ব্যাটারিতে চাপ পড়ে।
তাই আপনি যখন বাড়ির বাইরে যাবেন তখন ব্লুটুথ বা ওয়াইফাই বন্ধ করেই গেলে ভালো হয় বেশি। এর ফলে আপনার মোবাইল এর ব্যাটারি বেশি নষ্ট হবে না এবং মোবাইল হবে দীর্ঘস্থায়ী।
সব সময় চেষ্টা করবেন অরিজিনাল চার্জার দিয়ে চার্জ দেওয়া
ব্যাটারি ভালো রাখতে হলে সবচেয়ে যেদিকটা বেশি নজর দিতে হবে সেটি হল মোবাইল এর সাথে অরজিনাল চার্জার দিয়ে চার্জ দেওয়া।
আপনার মোবাইল নির্দিষ্ট পরিমান ভোল্টেজ এর চার্জ এডাপ্ট করে , যে পরিমান চার্জ এডাপ্ট করে সেটি কিন্তু অরজিনাল চার্জারে দেওয়া থাকে। এখন আপনি যদি অন্য একটা চার্জার দিয়ে চার্জ দেন তাহলে কিন্তু চার্জার মিসম্যাচ হয়ে যাবে। এর ফলে আপনার মোবাইলে উলটা পালটা চার্জ এডাপ্ট বা কনসিউম হব। এবং ব্যাটারির দীর্ঘস্থায়ী কমিয়ে দিবে।
তাই চেষ্টা করবেন যেকোনো পরিস্থিতে অরজিনাল চার্জার দিয়েই চার্জ দেওয়ার।
ডার্ক মোড এবং ডার্ক ওয়াল পেপারের ব্যবহার করা
যেসব মোবাইল Super Amoled Display সেই সব মোবাইলে কিন্তু ডার্ক মোড অন করে রাখলে অনেক বেশি পরিমান ব্যাটারি সেভ করা যায়। এবং ব্যাটারির স্বাস্থও অনেক ভালো থাকে। Super Amoled Display যুক্ত মোবাইলে যেই অংশটুকু ব্লাক সেখানে লাইট এর সোর্স দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। ব্লাক অংশটুকু পিউর ব্লাক রাখতে পারে। এর ফলে ব্যাটারির ব্যাকওয়াপ অনেক পরিমান বৃদ্বি পায়।
একই কথা ডার্ক ওয়াল পেপার ব্যবহার এর ক্ষেত্রে। মোবাইল এর বেশিরভাগ ব্যাটারির চার্জ কিন্তু ডিসপ্লে এর লাইট সোর্স এর জন্যই ব্যয় হয়ে থাকে। তাই আপনি যখন একটা কালো বা ডার্ক ওয়ালপেপার অথবা একটা ডার্ক থিম সেট করবেন, এর ফলে ব্যাটারির ব্যবহার এর পরিমান কমে আসবে এবং মোবাইল এর ব্যাটারি ড্যামেজ হওয়া থেকে বিরত থাকবে।
যে সব আপস বেশি ব্যাটার কনসিউম করে সেগুলো রেস্ট্রিক করে রাখুন।
মোবাইল এর সেটিংস থেকে কিন্তু খুব সহজেই দেখা যায় যে কোন আপস কতটুকু ব্যাটারি এডাপ্ট করতাছে। আপনি Usage battery থেকে কিন্তু এগুলো থেকে নিতে পারেন।
কোন আপস যদি দেখেন প্রয়োজন নেই তবুও প্রচুর পরিমানে ব্যাটারি ব্যয় করতাছে সেই আপসগুলোর আপনি ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেস বন্ধ করে দিবেন।
এভাবে সেটিংস থেকে Usage Battery মনিটর করে কিন্তু প্রচুর পরিমান ব্যাটারি সেভ করা যায়। আপনারাও চেষ্টা করে দেখতে পারেন এই উপায়টা।
লোকেশন প্রয়োজন না হলে বন্ধ রাখুন
আমাদের ৯০% ব্যবহারকারীর কিন্তু মোবাইলে লোকেশন অন করার কোন প্রয়োজন নেই, তবুও অনেক ইউজার বিনা কারণে লোকেশন সেবা বা জিপিএস সিস্টেম অন রাখি।
লোকেশন অন রাখা কিন্তু ব্যাটারির উপর মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে। ব্লুটুথ এবং ওয়াইফাই এর মত যদি আপনি লোকেশন সার্ভিস অন করে রাখেন তাহলে কিন্তু ব্যাকগ্রাউন্ডে প্রচুর আপস এই লোকেশন সার্ভিস ব্যবহার করে থাকে যার ফলে ব্যাটারিতে প্রচুর চার্জ ব্যয় হয়।
গেমস বা ভারী এপস ইউজ করার সময় ব্যাটারি চার্জ করবেন না
যখন গেমস বা ভারী এপস প্রসেসিং হয় তখন কিন্তু ব্যাটারিতে প্রচুর চাপ পড়ে। এই অবস্থায় আপনারা সবাই লক্ষ্য করেছেন যে ব্যাটারি অনেক গরম হয়ে যায়। আর ব্যাটারি যদি গরম হয় তবে কিন্তু এটি ভালো কোন সাইন না।
আর এই অবস্থায় যদি আবার চার্জ দেন তাহলে ব্যাটারির উপর মারাত্নক চাপ বেড়ে যায় ফলে ব্যাটারি ড্যামেজ খুব বেশি পরিমানে হবে।
আমাদের কথা
আজকের টিউটোরিয়ালে আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি কিভাবে মোবাইল ফোন ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়। আজকের টিউটোরিয়াল এই পর্যন্তই।