মোবাইল হ্যাক হলে কি করবো? মোবাইল হ্যাক সেটা কিভাবে বুঝবো এবং সমাধান

আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি সবাই ভালো আছেন। আপনারা হয়তো সবাই জানেন পৃথিবীতে সকল মোবাইল কিন্তু হ্যাক করা পসিবল। হ্যাক হয় না এমন মোবাইল পাওয়া যাবে না। এর কারণ হল মোবাইল কিন্তু প্রোগ্রাম বা আপ্লিকেশন এর মাধ্যমে চলে। আর এই আপ্লিকেশন হল  কিছু প্রোগ্রামিং কোড এর সমন্বয়ে তৈরি। আবার হ্যাকাররা আপনার মোবাইলটি হ্যাক করতেও কিন্তু প্রোগ্রামিং কোড ব্যবহার করে ।

যদি iPhone ব্যবহারকারীরা দাবী করে যে তাদের মোবাইল হ্যাক করা পসিবল না। কিন্তু হয়তো আপনারা ইতিমধ্যে জেনে গেছেন যে iPhone মোবাইল থেকেও কিন্তু পেগাসাস স্পাইওয়ার দ্বারা তথ্য এবং ডেটা চুরি করা সম্ভব হয়েছে।

এক্ষেত্রে আপনি যদি  বাটন বা ফিচার মোবাইল ব্যবহার করেন তাহলে হয়তো কিছুটা নিরাপদ পাবেন। তবে বাটন সেট ও কিন্তু SS7 আটাক এর মাধ্যমে গয়েন্দাগিরি করা যায়। তবে আপনি যদি কোন গয়েন্দা এজেন্ট এর খপ্পরে না পরেন তাহলে ss7 আটাক তেমন ভয়ের কিছু নাই। কারণ এটা অনেক ব্যয় বহুল হওয়ার কারণে ছোট-খাট হ্যাকার এটা ব্যবহার করতে যাবে না।




আমাদের আজকের এই টিউটোরিয়াল এর মাধ্যমে প্রথমে আপনাদের বুজাবো একটা মোবাইল হ্যাক হলে কিভাবে বুঝবেন? তারপর আপনাদের একটা ধারণা দিব যে আপনার মোবাইলটি হ্যাক হয়েছে সেটা কিভাবে সিউর হতে পারেন। তারপর আপনাদের কিছু উপায় বলবো যে মোবাইল হ্যাক হলে কিভাবে সমাধান করবেন।

আজকের টিউটোরিয়ালটা সাধারনত এন্ড্রয়েড মোবাইল হ্যাক হলে কিভাবে সমাধান করবেন সেটা নিয়েই । তবে আপনি এই ট্রিকগুলো ব্যবহার করে অন্য অপারেটিং সিস্টেম এর মোবাইলেও কাজে লাগাতে পারেন।

মোবাইল হ্যাক সেটা কিভাবে বুঝবো

এন্ড্রয়েড মোবাইল হ্যাক হলে বুঝা কিন্তু মুশকিল। আসলে লক্ষন গুলো দেখে বুঝা খুবই দূরহ হয়ে যায়। তবে কিছু কমন সমস্যা মোবাইলে দেখা যেতে পারে। যেমন,

মোবাইলে হঠাৎ এড আসা

আমরা যারা আমজনতা তাদের মোবাইল হ্যাক করে আসলে তেমন লাভ হয় না হ্যাকারদের। আমাদের সাধারন মানুষের ডেটা এবং তথ্য খুব বেশি কাজে লাগে না। এক্ষেত্রে হ্যাকাররা যদি সাধারন মানুষের মোবাইল হ্যাক করে তাহলে তারা চেষ্টা করে কিছু টাকা ইনকাম করার জন্য। এজন্য তার কিছু অটোমেটিক প্রোগ্রাম ইনস্টল করে দেয় আমাদের মোবাইলে যেগুলো বিজ্ঞাপন দেখায় আমাদের মোবাইলে। বিজ্ঞাপন দেখানো টাকা গুলো হ্যাকার এর পকেটে যায়। তাই আপনার মোবাইলে যদি ওল্টা পালটা বিজ্ঞাপন আসে এবং সেটা কোন জায়গায় ব্রাউজ আপনি না করার পরেও। তাহলে ধরে নিতে পারেন আপনার মোবাইলটি হ্যাক হয়েছে।

ব্যাটারির চার্জ না থাকা এবং গরম হওয়া

ব্যাটারির চার্জ না থাকা এটাও একটা প্রবলেম হতে পারে। তবে যদি আপনার মোবাইল এর ব্যাটারিতে প্রবলেম থাকে সেটা ভিন্ন কথা। যেহেতু আপনার মোবাইলটা  হ্যাকার কন্ট্রোল করতাছে তাই সব সময় আপনার মোবাইলে ইন্টারনাল ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ চলে। এর ফলে মোবাইল এর দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায় এবং  তাই মোবাইল আপনি ব্যবহার না করলেও গরম হবে। 

অজানা আপস অটোমেটক ইনস্টল

হ্যাকাররা মোবাইলে আপস ইনস্টল করেই হ্যাক করতে বেশি পছন্দ করে এবং এটা সবচেয়ে কমন একটা লক্ষন মোবাইল হ্যাক হওয়ার। আপনি যদি এমন কোন আপস দেখেন যেটা আপনি ইনস্টল দেন নাই তারপরও যদি দেখেন সেই আপস আপনার মোবাইলে ইনস্টল, তাহলে আপনার একটু সচেতন হওয়ার প্রয়োজন আছে।

এছাড়াও আরো কিছু প্রবলেম আছে যেমন ডাটা বেশি ব্যবহার করা, যায়হক এই বিষয়ে গুগলে সার্চ করলে আরো অনেক তথ্য পাবেন।

এখন কথা হল এগুলা তো কমন প্রবলেম আরো কিভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় যে মোবাইলটি হ্যাক হয়ছে কিনা। যদি উপরের প্রবলেম গুলো আপনার মোবাইলে দেখা দেয় তাহলে নিশ্চিত হওয়ার জন্য আপনি আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন।

মোবাইল থেকেই যেভাবে মেনুয়ালি চেক করবেন আদৌ হ্যাক হয়ছে কিনা

আপনার মোবাইল থেকে প্রেস করবেন *#*#4636#*#*  তাহলে আপনি নিচের স্ক্রিনশট এর মত দেখতে পারবেন,


এখান থেকে যদি আপনি usage statistics এর ভিতর প্রবেশ করেন তাহলে দেখতে পারবেন কোন আপস কত সময় ব্যবহার হয়েছে।


এভাবে চেক করার ফলে যদি এমন কোন আপস দেখেন যেটা আপনি ইনস্টল দেন নাই তাও ব্যাকগ্রাউন্ডে সেই আপস চলতাছে তাহলে ধরে নিতে পারেন, মোবাইল হ্যাক হতে পারে। Unusual Activity এর কোন আপস দেখতে পাইলে আপসটি Uninstall করে দিবেন।

আপস দ্বারা চেক করুন কোন Unusual Apps Automatic Install দেওয়া আছে কিনা

অনেক মোবাইলে   *#*#4636#*#* কোড এর মাধ্যমে  আপস ব্যবহার করার পরিসংখ্যান দেখা যায় না। সেক্ষেত্রে আপনি একটা আপস এর সহায়তা নিতে পারেন। এপসটার নাম হচ্ছে Apps Usage-Manage/Tract Usage



এই আপসটার মধ্যে দুইভাবেই আপস Usage track করা যায় আপনি চাইলে timeline অনুযায়ী দেখতে পারনে কোন আপস কতক্ষন ব্যবহার হয়েছে । অথবা আপনি দেখতে পারেন details view সারা দিনে কোন আপস কোন বার ইউস হয়েছে।

এভাবে চেক করলে আপনি নিজেই বুঝে যাবেন আসলে কোন হ্যাকার এর আপস ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতাছে কিনা!

কোন ক্ষতিকর  আপস পার্মিশন দেওয়া আছে কিনা চেক করুন

এই কাজটি আপনি সেটিংস থেকে Manage Apps এর ভিতর গিয়েও করতে পারেন । তবে আপনি চাইলে একটি আপস এর সহায়তা নিতে পারেন। সেই আপসটি হল App Permission Manager । এপসটি আপনি গুগল play store পেয়ে যাবেন।


এই এপস এর ভিতর প্রবেশ করলে আপনি দেখতে পারবেন কোন আপস এর কি পারমিশন দেওয়া আছে।

যদি দেখতে পান এরকম কোন আপস যেটার পার্মিশন দেওয়া প্রয়োজন নেই , বা এমন কোন পারমিশন দেওয়া আছে যেটা ঐ আপস এর প্রয়োজন নেই সেটা আপনি দেখে কন্ট্রোল করতে পারেন।

কিছু সাজেশন

থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট থেকে আপস ইনস্টল করবেন না

আমরা অনেক সময় অফিসিয়াল স্টোর থেকে ইনস্টল না করে গুগলে সার্চ দিয়ে থার্ডপার্টি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করি। এভাবে থার্ডপার্টি ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা কিন্তু প্রচুর রিস্ক। থার্ডপার্টি ওয়েবসাইটে থাকা আপসগুলো সাধারনত মোডিফাইড হয়ে থাকে। কোন হ্যাকার যদি মোডিফাইড করে এই আপস থেকে আপনার তথ্য চুরি করে তাহলে কিন্তু আপনি বুঝবেন না।

গুগল প্লে স্টোর কিংবা এ ধরণের অফিসিয়াল স্টোরে কিন্তু এই সমস্যা নাই। কারণ হল এখানে কোন মোডিফাইড আপস পাবেন না। অরজিনাল আপস পাবেন সব সময়। এই সব স্টোরে ডেভলোপার রা যখন আপস আপলোড দেয় তখন কিন্তু আপস স্টোর যারা পরিচালনা করে তারা চেকিং করে যে হার্মফুল কিছু আছে কিনা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলেই কেবল আপস আপলোড পার্মিশন পায়। তাই গুগল প্লে স্টোর বা এ ধরণের অফিসিয়াল স্টোর থেকে ডাউনলোড করা সম্পূর্ণ নিরাপদ।

পাব্লিক ওয়াফাই তে জয়েন্ট হবেন না

পাব্লিক ওয়াইফাই বলতে বুঝায়তাছি যে ওয়াইফাই ওপেন, সবাই ব্যবহার করতে পারে। এই ধরণের ওয়াফাই সাধারনত মার্কেট কিংবা বাসস্টপ ইত্যাদি স্থানে থাকে। এবং এই ওয়াফাই গুলো ওপেন সিকুরিটি হয়ে থাকে। পাসওয়ার্ড মাক্সিমাম ক্ষেত্রেই লাগে না ।

এখন এই ধরনের ওয়াইফাই সংযুক্ত হতে আপনাদের কেন মানা করতাছে তা কি জানেন? কারণ যখন আপনি এই ধরণের ওয়াইফাই তে সংযুক্ত থাকেন তখন হ্যাকারও এই ধরনের ওয়াফাই কানেক্ট হয়ে খুব সহজে আপনার ডিভাইস আকসেস নিয়ে নিতে পারে। হ্যাকার আর আপনি একই নেটওয়ার্ক থাকার ফলে আপনার আকসেস খুব সহজেই নিতে পারে।

অপ্রয়োজনীয় বা ফিশিং লিংকে প্রবেশ করবেন না

সব সময় চেষ্টা করবেন চেনা পরিচিত ওয়েবসাইট প্রবেশ করতে। কখন কোন লিংকে প্রবেশ করার পর কোন সাইটের পাসওয়ার্ড দেওয়ার আগে দেখে নিবেন যে আসলে আপনি আকচুয়াল সাইটে আছে কিনা। এজন্য এড্রেসবার থেকে দেখে নিবেন যে লিংক টা অরজিনাল কিনা। কারণ অনেক হ্যাকার কপি সাইট তৈরি করে। ধরুন ফেসবুকের কেউ কপি সাইট তৈরি করলো। এখন আপনি যদি কপি করা সাইটে ফেসবুকের ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে দেন সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনি আপনার ফেসবুক আকাউন্টি হারাবেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post